কৃষকসেতু,আউশগ্রাম:
শহরের কোলাহল নিত্যদিনের ব্যস্ততা ছেড়ে অবসরসময়ে নির্জন নিরিবিলি জায়গায় কাটাতে অনেকেরই পছন্দ। নির্জন প্রকৃতির মাঝে দু একদিন কাটানোর পর মানুষের মনে আবার কর্মব্যস্ততায় ফিরে যেতে নতুন করে উদ্যোম জোগায়। পুজোর ছুটিতে এক দুদিনের জন্য তেমনই মনোরম জায়গা পুর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম। জঙ্গলমহল আউশগ্রামে প্রকৃতির অপরুপ নিসর্গের পাশাপাশি রয়েছে পুরাতাত্মিক দর্শনীয় কিছু স্থান। যা ভ্রমনপিপাসুদের মন হরন করতে বাধ্য।
বর্ধমান শহর থেকে গুসকরায় ট্রেনে বা বাসে দুভাবেই সহজে আসা যায়। গুসকরা শহর থেকে গুসকরা মানকর রোড ধরে ৫কিমি গেলেই যাওয়া যাবে দিগনগর গ্রামের চাঁদনি দেখতে। চাঁদনি অনেকের কাছে জলটুঙ্গি নামেও পরিচিত। এই চাঁদনিকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে পর্যটন। এই চাঁদনির পাশে তৈরি করাহচ্ছে পার্ক। হারিয়ে যেতে বসা এই পুরাতত্বকে ফের সরকারি উদ্যোগে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। শোনা যায়, বর্ধমান মহারাজা কীর্তীচাঁদ রায় এই এই জলটুঙি তৈরি করেছিলেন।
স্থানীয় মানুষদের কাছে যা চাঁদনি নামে পরিচিত। আগে এই চাঁদনিতে মাঝে মধ্যেই আসতেন বর্ধমানের মহারাজা। এখানেই বসতো গানের আসর। চারিদিকে পুকুরের মাঝে একটি মহল। অনেকে এই মহলকে বলে হাওয়া মহল। চারিদিকে পুকুরের মাঝে ফাঁকা মহলে হাওয়া এক মনোরম পরিবেশ।এই মহলের মাঝে খোদাই করা রয়েছে রাজাদের স্থাপত্য। মহিলা ও পুরুষদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা স্নানের ঘাট। এই মহলের মাঝে দাঁড়ালে মনে হবে যেন ভিন্ন এক জগতে চলে এসেছেন।
তবে পর্যটকদের কাছে চাঁদনির মুল আকর্ষন জোছনা রাতে। মূলত পুর্নিমার রাতেই বর্ধমান মহারাজা জলবিহারে চলে আসতেন চাঁদনিতে বলে জানা যায়।
গুসকরা মানকর রোডে দিগনগর থেকে আট দশ কিলোমিটার দুরে সুয়াতা গ্রাম। এই গ্রামে দর্শনীয় স্থান হল পীর বহরানের সমাধিস্থল।সমাধিস্থলের পাশেই রয়েছে কয়েকশ বছরের প্রাচীন একটি বটগাছ। শোনা যায় পীর বহরান ছিলেন একজন সুফিসাধক। ভল্লুরাজার আমলে তিনি স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। তবে রাজপরিবারের সঙ্গে কোনওকারনে সংঘাত সৃষ্টি হলে সেনার হাতে প্রান গিয়েছিল পীর বহরানের। তবে তাঁকে আজও শ্রদ্ধার সঙ্গে মানেন আউশগ্রামবাসী।
গুসকরা থেকে গুসকরা মানকর রোড ধরে ১৬ কিলোমিটার গেলেই মাচান। ঝাঁচকচকে পাকা রাস্তা। দুরদুরান্তের বহু মানুষ অবসর সময় কাটাতে ছুটে আসেন মাচানে।
জঙ্গলমহল আউশগ্রামের ভাল্কি এলাকা রাজাদের আমলে একটি প্রমোদকেন্দ্র ছিল। জঙ্গলের ভিতরে তখন তৈরি করা হয়েছিল সুউচ্চ একটি মাচা। রাজারাণি অবসর সময়ে এই মাচার ওপর বসে জঙ্গলঘেরা প্রকৃতির অপরুপ নিসর্গ দেখতেন। তাছাড়া রক্ষীরাও মাচার ওপর থেকে নজর রাখতে পারতেন শত্রপক্ষের গতিবিধির ওপর। যাকে বর্তমান ভাষায় বলা চলে ‘ওয়াচ টাওয়ার’। সেই মাচা থেকেই এই এলাকার নাম হয়েছে ‘মাচান’।
আপনার পাড়ার পুজো তুলে ধরুন আমাদের মাধ্যমে কৃষক সেতু বাংলা
কৃষক সেতু বাংলা নিউজ আপডেট পেতে,
আপনি কি কবিতা , গল্প লেখেন ?
আমাদের পাঠান ' কৃষকসেতু বাংলা ' আপনার লেখা প্রকাশিত হবে, আমাদের পুজো সংখ্যায়
আপনার লেখা পৌঁছে দেব বাংলার দরবারে Email - krishaksetubangla@gmail.com
আপনার লেখা পৌঁছে দেব বাংলার দরবারে Email - krishaksetubangla@gmail.com
No comments
Post a Comment