প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) :- লকডাউনের জেরে চরম দুর্বিপাকে পড়েগিয়েছেন ভিন রাজ্য ও ভিন জেলায় কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা। করোনা নিয়ে কেন্দ্র নতুন নির্দেশিকা জারি করায় তাদের ভোগান্তি আরো বেড়ে গেছে। নিজের নিজের বাড়ি ফেরার জন্য হেঁটো মাইলের পর মাইল পথ পেরিয়ে এসেও ওই সব শ্রমিকদের বাড়ি ফেরা আর হলনা ।পথই এখন তাঁদের জীবন, পথই এখন তাঁদের মরণের স্থান হয়ে উঠেছে।
শুনতে অবাক লাগলেও সোমবার বেলা পর্যন্ত ২ নম্বর জাতীয় সড়কে পূর্ব বর্ধানের দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের আঝাপুর ও জৌগ্রামে শুধুই শোনা যায় বাড়ি ফিরতে চাওয়া শয়ে শয়ে মানুষের আকুল আর্তি ।খবর পেয়ে জামালপুর থানার পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা সেখানে পৌছেযান ।ক্লান্ত পরিশ্রান্ত সকল পরিযায়ী শ্রমীদের জন্য পানীয় জল ও খবারদাবারের ব্যবস্থ্যা করেন প্রশাসনের কর্তারা।আপাতত বাড়ি ফেরার চিন্তা ভাবনা ত্যাগ করে প্রায় ৫ শতাধীক পরিযায়ী শ্রমিকেকের ঠাঁই হয়েছে জৌগ্রামের একটি স্কুলে ।
রুটি রুজি যোগাড়ের জন্য পূর্ব বর্ধমানের প্রতিবেশী জেলার প্রায় ৫ শতাধীক শ্রমিকের কেউ ভিন রাজ্যে আবার কেউ ভিন জেলায় কাজ করতে গিয়েছিলেন । করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউন ঘোষনা হবার পরেই এইসকল পরিযায়ী শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার সদস্যরা চরম দুর্বিপাকে পড়েযান । তাঁদের কাজকর্মও বন্ধ হয়েযায়। খাবার দাবার জোগড় করাও দায় হয়েওঠে। এমন পরিস্থিতি তৈরি হবার পরেই তারা যে যার নিজের বাড়ি ফেরার পথ খোঁজা শুরু করেদেন।উড়িষ্যার কটকে কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরা নিজেদের বাড়ি ফেরার জন্য তিন দিন আগে রেলপথ ধরে হাঁটা শুরু করেন । আর যে পরিযায়ী শ্রমিকরা ভিন জেলায় কাজে গিয়েছিলেন তারা বাড়ি ফেরার জন্য সড়ক পথ ধরে হাঁটা শুরু করেদেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের স্ত্রী ও শিশু সন্তানরাও হাঁটা পথে রওনা হতে বাধ্য হন । এইসব শ্রমিকদের বেশির ভাগজনই বিহার ও ঝাড়খন্ড রাজ্যের বাসিন্দা। বাকিরা মুর্শিদাবাদ, বীরভূম ও আসানসোলের বাসিন্দা। দীর্ঘ পথ হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়ে এই সকল পরিযায়ী শ্রমিকদের বড় একটি দল এদিন সকালে জৌগ্রামে জাতীয় সড়কের ধারে বসেপড়েন । অপর একটি দল মসাগ্রামে জাতীয় সড়কের আন্ডার পাসের নিচে বসে পড়েন ।
এই খবর পাবার পরেই ত্রাতার ভুমিকায় তাদের কাছে পৌছেযান জামালপুর থানার ওসি পুষ্পেন্দু জানা ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খান । ওসি পুষ্পেন্দু জানা ও মেহেমুদ খান দ্রুত ওই সকল শ্রমিকদের জন্য খাবার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করেন ।
পরিযায়ী শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে সহযোগীতার হাত বাড়িযে দেয় জৌগ্রামের শাসক দলের কর্মিরাও ।
উড়িষ্যায় কাজ করতে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকরা এদিন জামালপুরের প্রশাসনিক কর্তাদের বলেন ,বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করেদেবার জন্য তারা উড়িষ্যা পুলিশের কাছে আবেদন করেছিলেন । কিন্তু উড়িষ্যা পুলিশ তাঁদের সঙ্গে অত্যন্ত নির্মম ও খারাপ ব্যবহার করেছে। সামান্য খাবার দেওয়া তো দূরের কথা উল্টে হুমকি ও হুঁশিয়ার দিয়ে তাঁদের দ্রুত উড়িষ্যা ছাড়ার কথা জানিয়ে দেওয়া হয় । সেকারণে বাধ্য হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য রেলপথ ধরেই হাঁটা শুরু করতে বাধ্য হন ।
আপতক মেমারির বাগিলার একটি স্কুলে ঠাঁই হয়েছে ১৪ জন পরিযায়ী শ্রমিকের ।
No comments
Post a Comment