প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ১০ নভেম্বর
ধর্ম হিন্দু হোক কিংবা মুসলিম , শেষ কথা মানবিকতা । আর সেই মানবিকতারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করলেন পূর্ব বর্ধমানের গলসির খানো গ্রামের ডাঙাপাড়ার আপামোর হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন । অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে এই গ্রামেরই দুই নাবালিকা সুহানা ও বিলকিস এবং তাঁদের মা তুহিনা বেগম । অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে নাবালিকাদের বাবা শেখ ইকবালের । এই অবস্থায় অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়াতে একজোট হয়েছেন গ্রামের হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের সকল মানুষজন । সবার সপথ একটাই , বাড়ি বাড়ি ঘুরে অর্থ সংগ্রহ করে তার চিকিৎসা করাব বিলকিস , সুহানা ও তাঁদের মা তুহিনা বগমের । মৃত্যুর মুখ থেকে তিনজনকে ফিরিয়ে আনতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে গ্রমবাসীরা ।
অগ্নিদগ্ধদের চিকিৎসা খরচ যোগাড় নিয়ে শনিবার মিগ্রা মিটিং হয় ।উভয় সম্প্রদারের মানুষজন সেই মিটিয়ে অংশ নেন । সেই মিটিংয়েই অর্থসাহায্য সংগ্রহ অভিযানে নামার সিদ্ধান্ত হয় । রবিবার বাড়ি বাড়ি ঘুরে একদিনেই তাঁরা সংগ্রহ করেছেন ৩০ হাজার টাকা ।জানাগেছে ,টাকার অভাবে ইকবালের স্ত্রী ও কন্যাদের চিকিৎসার যাতে কোন ত্রুটি না হয় তারজন্য গ্রমবাসীর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা পথে নেমেও অর্থ সংগ্রহ করবেন। মুক্ত হস্তে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন গ্রামবাসীরা ।
শেখ ইকবাল ও তাঁর স্ত্রী এবং কন্যাদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারার জন্য পাইপে করে ঘরে গ্যাস ঢুকিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল বাবা ও বড় দাদা । গুরুতর অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় । সেখানে মৃত্যু হয় ইকবালের । চিকিৎসাধীন রয়েছে ইকবালের স্ত্রী ও দুই কণ্যা । নৃশংস এই ঘটনা ঘটানোর দায়ে পুলিশ ইকবালের বাবা ও দাদাকে গ্রেফতার করেছে ।
খানো ডাঙাপাড়ার বাসিন্দা মনোজ দত্ত, রসময় আঁকুড়ে, রিন্টু রায়,মহিলা সুজাতা সাম, সোমা রায় সহ কাজি সমিরুদ্দিন, শেখ সানোয়ার, ইউনুস মিঁয়া, ইমাম আলি সহ অসংখ্য মানুষ পথে নেমেছে অর্থ সংগ্রহে । মানবিক এই ব্যক্তিরা জানালেন ঈশ্বর, আল্লাহর কাছে আমরা প্রার্থনা করে চলেছি । আমাদের সকলের বিশ্বাস আছে আমারা বিলকিস , সুহানা ও তুহিনাকে সুস্থ করে ফিরিয়ে আনতে পারবোই ।
No comments
Post a Comment