প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ২৩ জানুয়ারি
ছুটি অপভোগ করার অভিপ্রায়ে বিদ্যালয় শিক্ষরাই বদল ঘটিয়েদেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম তারিখের।২৩ জানুয়ারির পরিবর্তে ২২ জানুয়ারি খুদে ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে শ্রেণীকক্ষের ভিতরে নেতাজীর জন্মদিন পালন করে দায় সারেন শিক্ষকরা। পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের কোলসরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের এমন কীর্তির কথা জানাজানি হতেই ক্ষোভ বিক্ষোভ মাত্রা ছাড়ায় দেশবরেন্য বিপ্লবী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর প্রতি এই অবমাননা মেনেনিতে পেরেননি কোলসরা গ্রামের বাসিন্দারা ।তাঁরাই শ্রদ্ধা সহকারে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যদিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে নেতাজীর ১২৩ তম জন্মদিন পালন করলেন। পরে অনেটা বেলায় ক্ষোভ বিক্ষোভ সামাল দিতে দুই শিক্ষ বিদ্যালয়ে পৌছালে তাঁরা কার্যত গ্রামবাসীদের ঘাড়ধাক্কা খেয়ে বিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হন । ছুটি কাটাতে ব্যস্ত অপর দুই শিক্ষক অবশ্য এদিন বিদ্যালয়ে গড় হাজিরই থাকেন । গ্রামবাসীরা এদিন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতাজীর প্রতি অবমাননার ঘটনায় জড়িত বিদ্যলয়ের শিক্ষরা ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন ।
বর্ধিষ্ণু গ্রাম হিসাবেই পরিচিত জামালাপুর ব্লকের আবুজহাটি ২ পঞ্চায়েত এলাকার কোলসরা গ্রামটি । ১৯৬৮ সালে এই গ্রামেই প্রতিষ্ঠিত হয় কোলসরা প্রাথমিক বিদ্যালয় ।
সময় গড়ানোর সাথে সাথে গড়িমা বাড়ে বিদ্যালয়ের । প্রথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত পঠন পাঠন জারি থাকা এই বিদ্যালয়ে
ছাত্রী ছাত্রী বর্তমানে একশোর কাছাকাছি ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা সংখ্যা চারজন ।
দেশের বরেন্য বিপ্লবী ও মনীষীদের সম্পর্কে শ্রদ্ধা জাগাতে বিদ্যালয়ের দেওয়ালে আাঁকা রয়েছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ,ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ছবি । সেই ছবির পাশের লেখা হয়েছে তাঁদের মূল্যবান বাণী ।এমন বিদ্যলয়ে নেতাজীর প্রতি অবমাননা কোন ভাবেই মেনেনিতেন পারছেন অবিভাবক গ্রামবাসী এমনকি বিদ্যালয় পরিরিচালন কমিটির সভাপতিও ।
কোলসরা গ্রামের বাসিন্দা সুদীপ্ত বন্দোপাধ্যায়, অরুনাভ পাল প্রমুখরা বলেন , গোটা দেশবাশী জানেন নেতাজীর জন্ম তারিখ ২৩ জানুয়ারি।
পাঠ্য পুস্তক পড়ে সেটাই জেনে আসছে বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। এতসব কিছুর পরেও শুধুমাত্র ছুটি কাটানোর অভিপ্রায়ে পড়ুয়াদের বিভ্রান্ত করে বুধবার অর্থাৎ ২২ জানুয়ারি শিক্ষরা বিদ্যালয়ে নেতাজীর জন্মদিন পালন করেছে । জাতীয় পতাকা না তুলে চুপিসাড়ে বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষে দায়সারা ভাবে নেতাজীর জন্মদিন সারা হয় । এরপরে ওইদিনই শিক্ষকরা পড়ুয়াদের জানিয়েদেন বৃস্পতিবার ছুটি থাকবে বিদ্যালয় । সুদীপ্ত বাবু অন্য গ্রামবাসীরা অভিযোগে বলেন, শুধুমাত্র ছুটি কাটানোর জন্য নেতাজীর জন্ম তারিখ নিয়ে পড়ুয়াদের বিভ্রান্ত করলেন গুনধর শিক্ষক শিক্ষিকারা। এমনটা তাঁরা কেউ মেনেনিতে পারেন নি । তাই দেশবরেন্য বিপ্লবীর প্রতি ছাত্র ছাত্রীর যাতে শ্রদ্ধাশীল থাকে সেই দায়িত্ব নিজেরাই কাঁধে তুলে নেন ।পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে এদিন বন্ধ থাকা বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে নেতাজীর ফটোতে মালা পরিয়ে জাতীয় পতাকা উত্তলনের মধ্যদিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান ।
এদিকে গ্রামবাসী ও অভিভাবকদের ক্ষোভ বিক্ষোভের কথা জানতে পেরে এদিন বেলা ১১ টা নাগাদ প্রাধন শিক্ষিকা ইন্দ্রা লাহা বিদ্যালয়ে হাজির হন । অপর এক শিক্ষক সোমনাথ দাস বেলা ১২ টা নাগাদ বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন । সুদীপ্ত বাবু বলেন , গ্রামবাসীরা দুই শিক্ষকের কাছে জানতে চান কেন ২৩ জানুয়ারির পরিবর্তে ২২ জানুয়ারি বিদ্যালয়ে নেতাজীর জন্মদিন পালন করে এই দিনটিতে ছুটি ঘোষনা করা হয়েছিল ? দুই শিক্ষকের কেউই এই প্রশ্নের সদুত্তর দিতে না পারায় গ্রামবাসীরা তাঁদের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা ঊগরে দেন । বিদ্যালয় পরিচালন কমিটির সভাপতি অঞ্জনা পাল বলেন,নেতাজীর প্রতি চুড়ান্ত অবমাননার ঘটনা ঘটিয়েছেন বিদ্যালয় শিক্ষকরা।ওনারা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ করেছেন । এই ঘটনা নিয়ে প্রধান শিক্ষিকা সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরার সামনে মুখে কুলুপ অাঁটলেও ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেনেন অপর শিক্ষক সোমনাথ দাস ।
22 জানুয়ারি শ্রেণিকক্ষে নেতাজির জন্মদিন পালন করা হচ্ছে
জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান অচিন্ত কুমার চক্রবর্তী বলেন , এদিন বিদ্যালয়ে কোন ছুটি থাকেনি । নিয়ম করে বিদ্যালয়ে নেতাজীর জন্ম জয়ন্তী পালনের কথা ছিল । তা করা না হয়ে থাকলে অন্যায় হয়েছে । খোঁজ নিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
Bad news
ReplyDelete