ওই অনুষ্ঠানে ভারতের মুখ্য নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল , ডিআরডিও চেয়ারম্যান সতীশ রেড্ডি সহ দেশের জল , স্থল ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন । দেশের সেনাদের জীবন বাঁচাতে সাবিরের এই ভাবনার তারিফ করেছেন আপামোর বর্ধমানবাসী ।
পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বাদুলিয়া গ্রামের আদি বাসিন্দা সাবির হোসেন ও তার পরিবার । বর্তমানে সপরিবার তারা বর্ধমান শহরের রশিকপুরে বসবাস করেন । খণ্ডঘোষে রাইসমিল রয়েছে সাবিরের বাবা মোবারক হোসেনের । মা ইসমতআরা বেগম সাধারণ গৃহবধূ । খণ্ডঘোষের আনন্দমার্গ স্কুলে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়ার পর সাবির ভর্তি হন বর্ধমান সিএমএস হাই স্কুলে ।সেখান থেকে মাধ্যামিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পঠন পাঠন সম্পূর্ণ করে সাবির ভর্তি হন কলকাতার সেন্ট থমাস ইঞ্জিনিয়ারিং করেছে ।
সাফল্যের সঙ্গে ইলেকট্রিক্যালে বিটেক কোর্স সম্পূর্ণ করার পর সাবির এনআইটি রাউরকেল্লা থেকে বায়োমেডিকেলে এমটেক কোর্সও সম্পূর্ণ করেন । সাবির জানিয়েছেন ,এনআইটি রাউরকেল্লায় পড়ার সময়েই সেখানকার প্রফেসার ডঃ দেবেন্দ্র ভর্মার সঙ্গে তার ঘনিষ্টতা তৈরি হয় । তারই অনুপ্রেরনায় ভুবনেশ্বরে ‘মিরাকিউলস’ নামে নিজস্ব একটি প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরেটরি গড়ে তোলেন। এরপরেই শুরু হয় অভিনব কিছু প্রডাক্ট তৈরির চিন্তাভাবনা । সাবির বলেন , ক্ষত স্থানের রক্তক্ষরণ দ্রুত বন্ধের জন্য তাঁর কোম্পানির যে প্রোডাক্ট তৈরি করেছে তার নাম ‘স্টপ ব্লিড ’। এই প্রোডাক্টির জন্যই ডিআরডিও তাঁকে ও তাঁর কোম্পানিকে সন্মানিত করেছে ।
ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম ডিফেন্সের নানা ইনোভেশানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন । তার সূত্র ধরেই এখন ডিআরডিও এই ইনোভেশান নিয়ে প্রতিবছর কনফারেন্সের আয়োজন করেথাকে । সাবির বলেন ,এখন চিকিৎসকরা যে পদ্ধতিতে রক্তক্ষরণ বন্ধ করেন সেটা অনেক সময় সাপেক্ষ । তাদের ‘স্টপ ব্লিড’ প্রোডাক্ট ব্যবহারে ক্ষত স্থানেথেকে রক্তক্ষরণ মাত্র ২০ সেকেন্ডের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাবে । এটা সম্ভব হচ্ছে তাদের ‘স্টপ ব্লিড’ প্রোডাক্ট ব্যবহারের মাধ্যমে । এই প্রোডাক্টে ইনফেকশান প্রতিরোধক ক্ষমতাও রয়েছে । সবির জানান , তাদের প্রোডাক্টকে আরো উন্নত মানের করেতোলার চেষ্টা চলছে ।
যাতেকরে আরো কম সময়ে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা যায় । এমন প্রোডাক্ট আবিস্কারের চিন্তা ভাবনা কিভাবে এল ? তার উত্তরে সাবির বলেন , বেশ কয়েক বছর আগে তার বাবা মোবারক হোসেন দুর্ঘটনায় মারাত্মক জখম হয়েছিলেন ।তখন তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। ওই দিনই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন দ্রুত ক্ষতস্থানের রক্তক্ষরণ বন্ধকরা নাগেলে কিভাবে মানুষের জীবন সংকট তৈরি হয় । সেদিনই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন , দ্রুত ক্ষতস্থানের রক্তক্ষরণ বন্ধ করাযায় এমন প্রোডাক্ট তিনি তৈরি করবেন ।
আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতা খুনের প্রতিবাদে ধিক্কার মিছিল
সাবির চান দেশের প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষজন স্বার্থে হাসপাতালে তাদের প্রোডাকাক্ট পৌছে দিতে । যাতেকরে রক্তক্ষরণের কারনে কারুর যেন মৃত্যু না হয় । একই সঙ্গে সাবির জানিয়েছে , ‘ বিশেষ ধরনের একটি স্প্রে তৈরি নিয়ে তারা গবেষনা করছেন । যে স্প্রে ব্যবহার করে অগ্নিদগ্ধ হওয়া কোন রোগী দ্রুত সেরে উঠবেন । তার পোড়া জায়গায় কোনরকম ইনফেকশান হবেনা । দ্রুত পোড়া জায়গা শুকিয়ে গিয়ে সেখানে নতুন চামড়াও গজিয়ে যাবে । ’ সাবিরের বাবা মোবারক হোসেন বলেন , আমার ছেলের প্রতিটি আবিস্কার দেশের মানুষের কল্যানে ব্যবহৃত হোক এটাই আমি চাই ।
No comments
Post a Comment