প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান
গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত ১২ জনের আমৃত্যু কারাদন্ডের নির্দেশ দিল পূর্ব বর্ধমানের কালনা আদালত । সোমবার আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তপন কুমার মন্ডল এই সাজা ঘোষনা করেন । সাজাপ্রাপ্তরা হলেন গণেশ দাস, বাবু সরকার, তাপস রায় ওরফে পাখি, নাজির শেখ, প্রীতম কর্মকার ওরফে ডমকা, মিনতি হালদার, কুন্তল দেবনাথ, তন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজু পাত্র, সাগর বাছার, সুমন মণ্ডল ওরফে কানু এবং সমরেশ হালদার। অভিযুক্ত প্রত্যেকের বাড়ি কালনার বারুইপাড়া, যোগীপাড়া ও সংলগ্ন এলাকায়। কালনা আদালতের বিচারক এমন নজিরবিহীন সাজা ঘোষনা করায় খুশি মৃতদের পরিবার পরিজন। আদালতসূত্রে জানা গেছে ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারির ঘটনা । নদীয়া জেলার রানাঘাট থেকে পাঁচজন ব্যক্তি কালনা শহরে এসেছিলেন আমগাছে ওষুধদিতে । ছেলেধরা সন্দেহে তাদের আটকে রেখে গণপিটুনি দেয় অভিযুক্তরা । আমগাছে ওষুধ দিতে আসাদের মধ্যে রানাঘাটের রাঘবপুরের বাসিন্দা অনিল বিশ্বাস ও নারায়ণ দাসের মৃত্যু হয় গণপিটুনিতে । জখম হন মধুমঙ্গল তরফদার,ব্যাঞ্জন বিশ্বাস ও মানিক সরকার নামে বাকি তিনজন।এই ঘটনায় দায়ের হওয়া অভিযোগের ভিত্তিতে কালনা থানার পুলিস ২৬ জনের নামে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে।ধৃতদের মধ্যে একজন মহিলা এবং একজন নাবালকও ছিল । বাকি ছ’জন পলাতক থাকে ।এই মামলায় ৫৭ জন সাক্ষ্য দেন।শুক্রবার কালনা মহকুমার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক তপন কুমার মণ্ডল ১২জনকে দোষী সাব্যস্ত করেন ও সাতজনকে বেকসুর খালাস করে দেন। কার্তিক মণ্ডল নামে একজনের বর্ধমান জুভেনাইল কোটে বিচার চলছে।
এই মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় বলেন,নদীয়ার রাণাঘাটের রাঘবপুর থেকে কয়েকজন নিরপরাধ ব্যক্তি কালনার বারুইপাড়ায় আম গাছে ওষুধ স্প্রে করতে এসেছিলেন।সঙ্গে ওষুধ দেওয়ার মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জামও ছিল।নিজেদের পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও ছেলেধরা সন্দেহে তাঁদের বেৎধে গণপিটুনি দেওয়া হয় । মারধোরে দু’জনের মৃত্যু হয়। ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত হবাবার পর সোমবার বিচারক তাঁদের আমৃত্যু কারাদন্ডের সাজা ঘোষণা করেন।
No comments
Post a Comment