দক্ষিণবঙ্গ

ধ্বসে পড়া ঐতিহ্যপূর্ণ বর্ধমান রেল স্টেশনের ভবন পূর্বেকার রূপে ফিরিয়ে আনতে রেল দপ্তর কি ব্যবস্থা নেয় সেদিকেই তাকিয়ে বর্ধমান বাসী

Sunday, January 5, 2020

/ by krishaksetu Bangla


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়  বর্ধমান ৫ জানুয়ারি 

হেরিটেজ  স্টেশানের  স্বীকৃতি পাওয়া শতাব্দী প্রাচীন  বর্ধমান রেল স্টেশন মূল প্রবেশ পথের  একাংশ  শনিবার রাতে হঠাৎতই ভেঙে পড়ে । এই দুর্ঘটনায় জখম দুজনকে রাতেই ভর্তি করা হয়েছিল বর্ধমান  মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । সেখানে গভীর রাতে  একজনের মৃত্যু হয় ।  বছর ৩৫ বয়সী ওই মৃত ব্যক্তির নাম ও পরিচয় এখনও  জানাজায়নি ।অপর জখমদ ঝাড়খণ্ডের মহেশপুরের হোপনা টুডুর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকায়  রবিবার দুপুরে তাঁকে  হাসপাতাল থেকে ছুটি দিয়েদেওয়া  হয় । ঐতিহাসিক তথ্য বলছে ১৮৫৫ সালে  সম্পূর্ণ হয়েছিল বর্ধমান স্টেশান  নির্মানের কাজ । সেই বছরেই উদ্বোধন হয়  স্টেশানটির। এতদিন সুপাচীন ঐতিহ্যের স্বাক্ষ  বহন করে আসা সেই  বর্ধমান  স্টেশানের একাংশ ধ্বসে পড়ায় হতাশ ইতিহাস প্রেমীরা। 

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে  শনিবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ বর্ধমান স্টেশনে চলে আসেন ডিআরএম (হাওড়া) ঈশাক খান-সহ রেলের  অন্য আধিকারিকরা। ডিআরএম  বর্ধমান স্টেশানের ভেঙেপড়া অংশের সবিস্তার  পরিদর্শন করেন। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে  গিয়েও তিনি  আহতদের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন । রবিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ জেনারেল ম্যানেজার (পূর্ব রেল) সুনীত শর্মা ও বর্ধমান স্টেশানের দর্ঘটনাস্থল  পরিদর্শন করেন । 

তিনি বলেন, “তদন্ত শেষ না হলে ঘটনার কারণ বলা সম্ভব নয়। আইআইটির (খড়্গপুর) সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। আশা করছি, উচ্চ পর্যায়ের কমিটি তাঁরা পাঠাবে। তারপরে কী করা যাবে, তা ঠিক করা হবে।“ গোটা ঘটনার জন্য এদিন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রেল দফতরকেই কাঠগোড়ায় তুলেছেন । তিন বলেন ,“বর্তমানে রেল দফতরটাই ফোঁপড়া হয়েগেছে । যার জরে সুপ্রাচীন বর্ধমান  স্টেশান ভবনের এমন করুন পরিণতি হল । ”


বর্ধমান  স্টেশানের সৌন্দর্যায়নের কাজ কিছুদিন শুরু হয় । স্টেশানের  ভবনের ছাদ সংস্কার ছাড়াও থামগুলির  সংস্কার করার কাজের  জন্য  চটান হয় প্লাস্টার । স্টেশান এলাকায় হকারি করেন এমন কিছু ব্যক্তি ও  নিত্যযাত্রীরা জানান সংস্কার কাজে  ‘ড্রিল’ ব্যবহার করা হচ্ছিল। এই সকল ব্যক্তিদের দাবি  ড্রিলের  কাজের সময়ে কম্পনের কারণে  অনুসন্ধান কেন্দ্রের সামনে পুরানো ইটের থাম নড়ে যায় । 

সেকারণেই স্টেশানে প্রবেশ পথের সামনের ভবনের  ছাদের অংশও ভেঙে পড়ে । এই দুঘটনার পর  সংস্কার কাজ নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেতে শুরু করেছে । প্রশ্ন উঠেছে শতাব্দী প্রাচীন এই স্টেশান  ভবনের  ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ করার পরেই   কী সংস্কার  কাজে শুরু হয়েছিল? । যে ধরনের সতর্কতা নেবার কথা ছিল তা কি নেওয়া হয়েছিল ?এই সব প্রশ্নের সদুত্তর অবশ্য এদিন জেনারেল ম্যানেজারের কাছ থেকেও মেলেনি । তিনি শুধে  বলেন, “আমার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখব।“ তবে  বর্ধমান স্টেশনের ভবনগুলির ‘স্বাস্থ্য পরীক্ষা’ করানোর  আশ্বাস এদিন তিনি দিয়েছেন।


এদিন বেলা থেকে শুরু হয় ভেঙেপাড়া অংশ সরিয়ে ফেলার কাজ ।ধ্বসে পড়া  ঝুলন্ত-বারান্দা সহ অন্যান অংশের আর যাতে ক্ষতি না হয় তার জন্য  ‘সিসি ক্রীব’ দিয়ে থাম তৈরি করা হয়েছে। স্টেশান ভবনের একাংশ ধ্বসে পড়ার  কারণ অনুসন্ধানে রেল দফতর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । আগামী ১০ দিনের  মধ্যে তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্ট  পেশ করার কথা ।

সেই রোপর্ট মোতাবেক  ঠিক হবেকিভাবে হবে মেরামতি কাজ । তবে কম্পনের কারণে ভবনের  আর যাতে কোন ক্ষতি না হয় তার জন্য এদিন  বর্ধমান স্টেশান দিয়ে চলাচল করা ট্রেন গুলির গতিবেগ কম রাখা হয় । এদিন বর্ধমান স্টেশান দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেক  আতঙ্ক পিছু তাড়া করে বেড়াচ্ছিল যাত্রীদের । 


No comments

Post a Comment

loading...
Don't Miss
© all rights reserved
By SDK IT SOLUTION