কাটোয়ার কেতুগ্রামের 'দধিয়া' গ্রামে বৈরাগ্য তলার মেলা প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশী প্রাচীন। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সংখ্যার বিচারে বীরভূমের জয়দেবের মেলাকে টেক্কা দেওয়ার মতো। কাটোয়া মহকুমার সব থেকে বড় এই গোপালদাস বাবাজির বৈরাগ্য তলার মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়।
দুই বর্ধমান সহ বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদীয়া এবং সারা বাংলার বিভিন্ন জেলা থেকে অসংখ্য মানুষজন প্রতিদিন ভিড় জমান এই মেলায়।
প্রতি বছর মাকর সপ্তমী তিথিতে বৈষ্ণব সাধক গোপালদাস বাবাজির মন্দিরের বাৎসরিক উৎসবকে কেন্দ্র করে বিশাল মেলা বসে।
দূর দূরান্ত থেকে প্রচুর বৈষ্ণব বৈরাগীরা এই মেলায় আসেন বলে, তাই এই মেলার নাম বৈরাগ্য তলার মেলা।
শুধুই বৈরাগীরাই নন সাধু সন্ত, বাউলরাও আসেন মেলার বিভিন্ন আগ্রা গুলিতে।
মন্দির চত্বরের আশেপাশে ছোট্ট ছোট্ট তাঁবু খাটিয়ে তার ভিতরে চলে সাধন ভজন। যেগুলি এখানে আগ্রা নামে পরিচিত।
মূল মন্দিরের ভিতরে রয়েছে গোপালদাস বাবাজির সমাধিস্থল। সেখানে পূজা অর্চনার পাশাপাশি মেলার প্রথম দিন চিঁড়ের ভোগ এবং পরের দুই দিন অন্নের ভোগ হয়। যেটা এখানে সবার কাছে চিঁড়ে মচ্ছব ও অন্ন মচ্ছব নামে প্রচলিত। বিভিন্ন গ্রামগঞ্জ থেকে আগত কয়েকশো আগ্রা গুলিতে বিনামূল্যে লক্ষাধিক দর্শনার্থীদেরকে দুই দিন ধরে দুপুরের আহার দানের ব্যবস্থা থাকে।
শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরাই নন মুসলমান সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষজন আসেন এই মেলায়। জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের সমাগমে সাতদিন ধরে চলে এই মেলা।
মেলার দোকান গুলিতে কাঠের তৈরী জিনিসপত্র থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় সংসারের যাবতীয় সামগ্রী পাওয়া যায় সুলভে। তাই এই মেলায় কেনা কাটায় খুব উৎসাহ থাকে মানুষজনের মধ্যে।
মেলায় এক দিকে বৈরাগীদের সাধনভজন এবং অন্য দিকে মানুষজনের আনন্দ উচ্ছাসে জমে ওঠে এই দধিয়া বৈরাগ্য তলার মেলা।
No comments
Post a Comment