বর্ধমান ( প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ) :- হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের পোলে উঠে কাজ করার সময়ে তড়িতাহত হয়ে বিভৎস ভাবে আগুনে পুড়ছিল এক যুবক ।জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই যুবকে উদ্ধার করলো গ্রামবাসীরা। ভয়াবহ এই ঘটনাটি রবিবার দুপুরে ঘটেছে বর্ধমান শহরের অদূরে নেড়োদিঘী এলাকায়।বিদ্যুৎ দফতরের ঠিকাদারের অধীনে কাজ করা যুবক তাপস দাস কে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।তার বাড়ি কাটোয়ার জামড়া গ্রামে। যুবকের শারীরিক অবস্থা সংকটজনক বলে জানাগেছে ।নেড়োদিঘীর বাসিন্দারা এই ঘটনার জন্য বিদ্যুৎ দফতর ও ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতিকেই দায়ি করেছেন।
গ্রামবাসী সেখ ইয়াসিন , সেখ আজাদ প্রমুখরা জানিয়েছেন,তাঁদের গ্রামের ১১ হাজার ভোল্টের একটি ট্রান্সফর্মার প্রায়শই বিকল হয়ে থাকে।বিদ্যুৎ দপ্তরকে বারবার জানানো হলেও ট্রান্সফরমারটি বদলে দেওয়া কিংবা সঠিক ভাবে মেরামত করেদেবার কোন উদ্যোগ বিদ্যুৎ দফতর নেয়নি ।সেকারনে এদিনও গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ থাকে। দুপুরে বর্ধমান ২ ব্লক (দক্ষিন)বিদ্যুৎ সরবরাহ দফতরের ঠিকা শ্রমিকরা মেরামতি কাজে আসে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে ঠিকা শ্রমিক রাজু দাস হাই ভোল্টেজ বিদ্যুৎ লাইনের পোলে কাজে ওঠে । নিচে দাঁড়িয়ে ছিল ঠিকাদার সংস্থার সুপারভাইজার ও অন্য এক কর্মী ।সেখ ইয়াসিন বলেন , পোলের একেবারে উপরে উঠে কাজ করার সময়ে তড়িতাহত হয়ে তাপস দাসের শরিরে আগুন ধরে যায়। দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে তার শরীর । বাঁচার জন্য সে আর্ত চিৎকার শুরু করে । সেই চিৎকার শুনে গ্রামের সবাই সেখানে ছুটে যায় ।তাসকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে ওই সময়ে সুপারভাইজার ও অপর এক কর্মী এলাকা ছেড়ে পাালাতে গেলে গ্রামবাসীরা তাঁদের ধরে ফেলে ক্ষোভ উগরে দেন। এরপর গ্রামবাসীরাই বুদ্ধি খাটিয়ে পোলের নিচে একটি লরি দাঁড় করিয়ে তার ত্রিপল নিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে । ততক্ষণে ঠিকা কর্মী তাপসের শরীরের অনেকটাই আগুনে ঝলসে যায়। আশঙ্কা জনক অবস্থায় গ্রামবাসীরাই তাকে নিয়েগিয়ে ভর্তি করে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ।
এদিকে ভয়াবহ এই ঘটনা চোখের সামনে দেখে এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন নেড়োদিঘীর বাসিন্দারা । গ্রামবাসী সেখ আজাদ জানান,
ঠিকাকর্মী তাপসের শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছে ।ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী এই ঘটনার জন্য বিদ্যুৎ দপ্তর ও ঠিকাদার সংস্থার গাফিলতি ও অমানবিকতাকেই সম্পূর্ণভাবে দায়ী করেছেন ।
এই ঘটনা বিষয়ে বিদ্যুৎ দফতরে রিজিওনাল ম্যানেজার(বর্ধমান) রাজু মণ্ডল জানিয়েছেন , ‘আমার কিছু জানানেই । কি ঘটনা ঘটেছে খোঁজ নিয়ে দেখছি ।তবে বার বার প্রশিক্ষণ দেবার পরেও যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তা দুর্ভাগ্যজনক । ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হবে । ’
No comments
Post a Comment